শলুক এমন ঘ্রানের রাজা
তুলে রাখায় বনে-প্রজা ।
শলুক পাতা তোলার পর যত দ্রুত সম্ভব খেতে হয়, যতই সময় গড়ায় ঘ্রান কমতে থাকে । মাছের তরকারীর সহিত শলুকের শখ্যতা একটু বেশী হলেও স্যুপ-সালাদ, মুড়ি-মাখা, বরই-মাখা ইত্যাদি সহ রন্ধনশালার স্বাদ ও কনফেকশনারির ঘ্রাণ বাড়াতে এর কোন জুড়ি নেই । অঞ্চলভেদে বাংলাদেশের মানুষের কাছে শলুক সুপরিচিত-অপরিচিত দু’টোই । বিশেষ করে দেশের উত্তরাঞ্চলে শলুক পাতা ধনিয়া পাতার মতোই ব্যাপকভাবে প্রচলিত ।
প্রচলিত শলুক থেকে আলাদা-ইউরেশিয়ান শলুক (Anethum graveolens)-আম্বেলিফেরি পরিবারের নিজ বংশের একমাত্র প্রজাতি । প্রাচীন মিশরীয় বনি ইসরাইল গোত্র থেকে এর উৎপত্তি । শলুকের ইংরেজী প্রতিশব্দ Dill; ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষায় যার অর্থ সুগন্ধি । আমেরিকানরা প্রতি বছর তাদের ৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি ব্যবহার করে পছন্দের এই শলুকের পিছনে । শলুক সজ্জিত ফুলের তোড়া আমেরিকায় বেশ প্রচলিত আর এ জন্য একে ‘ফুলেরতোড়া শলুক’ও বলা হয়ে থাকে ।
ঝাউসদৃশ্য সবুজ পালকের ন্যায় পাতলা পাতাগুলি-স্পর্শে মখমল সুলভ । পরিপক্ক ফুলেল শলুক ক্ষেতে সাদা-হলুদের ঢেউ খেলে যায় । মন ভরে যায় (পুস্পমঞ্জুরী তথা ছাতার ন্যায় মাথায়) ঘূর্ণায়মান মৌমাছির পর্যবেক্ষক দলের ভীড়ে ও গুঞ্জনে । বাড়িতে বাগানে বা পাত্রে রোদ্রময় স্থানে যে কোন সময় বীজ ছিটালেই জন্মে । পরিপক্ক বীজ পাখি খায় না । সাথী ফসল হিসেবে শশা ও ব্রোকলীর পাশে শলুক বেশ সুন্দর বেড়ে ওঠে । একটু দুরে রাখতে হবে গাজর ও টমেটোকে ।
৩০০০ বছর পূর্বের একটি প্রাচীন মিশরীয় চিকিৎসা গ্রন্থে এর উল্লেখ পাওয়া যায় । শলুক বীজ পেটের সমস্যা ও শ্বাসকষ্ট প্রশমিত করে এবং চিবিয়ে খেলে বাচ্চাদের তাৎক্ষনিক ক্ষুধা নিবারন হয় । স্তন্যদানকারী মহিলাদের বেশী করে খাওয়া দরকার ।