গাঁদা ফুলের ইংরেজী নাম Marigold [হযরত ঈসা (আ) এর কুমারী মাতা মরিয়ম (আ) থেকে Mari আর স্বর্নালী পাপড়ির কারনে Gold]-Composite পরিবারের একটি সদস্য । প্রধানত আফ্রিকান (ইনকা) ফরাসি (কমলা হলুদ তাই রক্তগাঁদা) ও চাইনিজ গাঁদার প্রচলন বেশী দেখা যায় । শীতকালীন গাঁদার ক্ষেত্রে ইংরেজী বৎসরের ১২ তম মাস অবধি ৪০ সেমি X ৪০ সেমি দুরত্বে ১ মাস বয়সী চারা গাঁদা রোপন করতে হয় । ৪০ দিনের মধ্যে ফুল সংগ্রহ করা যায় । গড়ে একটি গাছে জাত ভেদে ২০-৪০ টি ফুল ধরে ।
গাঁদা ফুলের এক গাদা ভেষজ গুণাবলী:
(১) গাঁদা পাতা ছেঁচে রসসহ কাটা স্থানে লাগালে রক্ত পড়া বন্ধ হয় (২) ফুল ও পাতার রস কানের ব্যথা বা কান পাকায় আরোগ্য লাভ হয় (৩) গাঁদা ফুল বেটে নারিকেল তেলের সাথে মিশিয়ে মাথায় ১০/১৫ দিন লাগালে মাথার খুশকি দূর হয় ও চুল কালো হয় (৪) গাঁদা ফুল শুকিয়ে পুড়ে ছাই দিয়ে নিয়মিত দাঁত মাজলে দাঁতের গোড়া শক্ত হয়-মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়-মুখের ঘা থেকে রক্ষা পাওয়া যায় (৫) জমিতে গাঁদা গাছের শুকনা গুড়া বা অপ্রয়োজনীয় অংশ প্রয়োগ করে নেমাটোডের মতো মারাত্মক রোগের উপদ্রব থেকে রক্ষা পাওয়া যায় (৫) গাঁদা ফুলের পাপড়ি অল্প পরিমাণ মাখনের সাথে মিশিয়ে টানা কয়েকদিন খেলে অর্শ্ব-পাইলসের সমস্যা দূর হয় ও রক্ত পড়া বন্ধ হয় (৭) ১৯৯৮ সালের ওয়াশিংটন স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকগন এই ঐক্যমতে পৌছেছেন যে-গাঁদা ফুলের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুকি কমায় (৮) গাঁদার ফুলের রস থেকে সুগন্ধি আতর তৈরি হয়ে থাকে (৯) গাঁদা ফুলের রস হলো প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপ্টিক তাই ব্রনে লাগালে দ্রুত সেরে যায় (১০) রোদে পোড়া ত্বকে গাঁদা ফুলের রস লাগালে কিছুক্ষণের মধ্যেই জ্বালা ভাব চলে যায় এবং ত্বক শীতল হয় (১১) গাঁদা ফুলের পাপড়ি শুকিয়ে গুঁড়ো করে জাফরানের বদলে ব্যবহার করা যেতে পারে (১২) সালাদের সাথে গাঁদা ফুলের তাজা পাপড়ি মিশিয়ে খাওয়া যায় এতে কোন ফ্যাট নেই (১৩) গাঁদা ফুলের পাপড়ি সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে মুখও ধোয়া যায় বা চা বানিয়ে পান করা যায় ।
গাঁদা পাতা-ফুল (পাতা কম-পাপড়ি বেশী) সিদ্ধ করে পরিমিত পানি-চিনি ও পছন্দ মাফিক অন্যান্য মশলা মিশিয়ে চা তৈরি করে পান করুন । গাঁদা ফুলের চা নিয়মিত পান করলে মুখের ব্রণ দূর হয়ে ত্বক মসৃন হয়, হজম শক্তি বাড়ে ও গ্যাস্ট্রিক-আলসারের সমস্যা দূর হয় । বিশেষ করে বাড়ন্ত মেয়েদের ক্ষেত্রে পিরিয়ড় সংক্রান্ত মেয়েলী সমস্যায় নিয়মিত গাঁদা ফুলের চা পান অত্যন্ত উপকারী । এই চা চোখের রেটিনাকে ভালো রাখে এবং দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখে ।